আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আমেরিকার ড্রোন হানায় জওয়াহিরির মৃত্যু চিনকে চাপে রাখবে বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল।
পরিকল্পিত পদক্ষেপ, নাকি নিছকই সমাপতন? ২৫ বছর পর মঙ্গলবারই তাইওয়ান সফরে আসছেন আমেরিকার কোনও স্পিকার। আর সেই দিনই কি না মার্কিন ড্রোন থেকে নিক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্রের ঘায়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল আল কায়দা প্রধান আল জওয়াহিরির দেহ! চিনের হুমকিকে কার্যত অগ্রাহ্য করেই তাইওয়ানের রাজধানী শহর তাইপেইতে অবতরণ করতে চলেছে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ-এর স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির বিমান। পেন্টাগনের তরফে সরকারি ভাবে জানানো না হলেও কানাঘুষোয় শোনা যাচ্ছিল, এশিয়া সফরে জাপান, সিঙ্গাপুরের সঙ্গে তাইওয়ানকেও ছুঁয়ে যেতে চাইছেন মার্কিন প্রশাসনের তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ এই ব্যক্তি। জল্পনাকে সত্যি করে যে দিন পেলোসি তাইওয়ানে আসছেন, সেই দিনই সরকারি ভাবে জানা গেল, খাস কাবুলেই নিহত পয়েছেন জওয়াহিরি। যদিও রবিবার ভারতীয় সময় অনুযায়ী সকাল ৭টা ১৮ মিনিটে এই হামলাটি হয়েছে হলে জানা গেছে।
আফগানিস্তান প্রশাসন সূত্রে খবর, সে দেশের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী সিরাজুদ্দিন হক্কানির সরকারি বাসভবনে থাকতেন জওয়াহিরি। রবিবার সকালে এই বাড়িতেই আমেরিকান ড্রোন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। মুহূর্তের মধ্যে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় আল কায়দা প্রধানের দেহ। জওয়াহিরির অবস্থান নিয়ে আগে দিল্লিকে হক্কানি জানিয়েছিলেন, আল কায়দা-প্রধান ইরানে আছেন। কিন্তু আমেরিকার গোয়েন্দা বিভাগ যে তাঁর গতিবিধির ওপর নজর রেখেছিল, এই আকস্মিক হামলা তারই প্রমাণ। জো বাইডেনের প্রশাসন এই হামলার মধ্যে দিয়ে এটাও প্রমাণ করে দিল যে, মধ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার যে কোনও দেশে, যে কোনও লক্ষ্যবস্তুতে নিঁখুত ভাবে হামলা চালাতে সক্ষম তারা। ২০২১-এর ১৫ অগস্ট তালিবান আফগানিস্তানের দখল নেওয়ার পর থেকেই ক্রমশ শক্তিবৃদ্ধি করতে থাকে জঙ্গিগোষ্ঠী আল কায়দা।
প্রসঙ্গত, তাইওয়ান সফর নিয়ে চিন-আমেরিকা স্নায়ুযুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছে। চিনের সরকারি মুখপাত্র জানিয়েছেন, তাইওয়ান প্রশ্নে ‘অতিসক্রিয়তা’ দেখালে চিনের সেনাবাহিনী নিষ্ক্রিয় ভাবে বসে থাকবে না। চিন তাইওয়ানকে নিজেদের অবিচ্ছেদ্য অংশ মনে করলেও, আমেরিকা বরাবরই তাইওয়ানকে ‘স্বতন্ত্র রাষ্ট্র’ হিসাবে দেখে এসেছে। এই প্রেক্ষিতে আমেরিকার ড্রোন হামলায় জওয়াহিরির মৃত্যু চিনকে চাপে রাখবে বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.